হিন্দুধর্মের অত্যন্ত প্রচলিত একটা ভুল ধারণা হলো ৩৩ কোটি দেবতা। প্রকৃত ব্যপারটা দেখে নেয়া যাক।
দুইটা পয়েন্ট দেখে আলোচনা করব। একটা হল "কোটি" শব্দটির অর্থ নিয়ে। আরেকটা হল "দেবতা" শব্দটা নিয়ে। প্রথমেই কোটি শব্দটি নিয়ে বলি। কোটি অর্থ প্রচলিত বাংলায় Crore হলেও সংস্কৃত ভাষায় তার অর্থ "ধরণ" বা "প্রকার"।
আর বেদ এ দেবতা বলতে কোন শব্দ নেই। মূল সংস্কৃত শব্দটি হল দেব যার অর্থ শক্তি। অর্থাত্ ঈশ্বরের ৩৩ ধরণের শক্তি। এ বিষয়ে প্রথমেই যজুর্বেদ এর একটি মন্ত্র দেখে নেয়া যাক-
অর্থাত্ যাঁহার প্রভাবে গতিশীল প্রকৃতি নিয়ন্ত্রিত হয়, প্রজার পালক, সর্বব্যপক, অন্তরীক্ষে ব্যাপ্ত, তাঁহার মহাভূতের তেত্রিশ প্রকার গুণের স্তুতি কর।
এখন তেত্রিশ ধরণের শক্তির ব্যখ্যা দেখা যাক। শতপথ ব্রাহ্মন ১৪.৫ এ যাজ্ঞবল্ক্য ঋষি শাকল্যকে বলছেন - দেব ৩৩টি যা পরমেশ্বরের মহিমার প্রকাশক। ৮ বসু, ১১রুদ্র, ১২ আদিত্য, ইন্দ্র, প্রজাপতি।
শতপথ ব্রাহ্মন, মনুসংহিতা ও বৃহদারন্যক উপনিষদে এর বিস্তারিত বর্ণনা দেয়া আছে।
অসাধারন এই শৈল্পিক ও গভীর দার্শনিক কথোপকথন ব্যখ্যা করছে সেই এক এবং অদ্বিতীয় পরব্রহ্ম থেকে সবকিছু উৎপন্ন হতে শুরু করে।
একে একে অগ্নি, বায়ু, আদিত্য, ভু, দ্যু এবং অন্তরীক্ষলোক, বিদ্যুত্শক্তি সবকিছুই তার থেকে তৈরী হয় যাদেরকে ৩৩টি ভাগে ভাগ করা হয় এবং এদেরকে বলা হয় দেব অর্থাত্ শক্তি। আর দিন শেষে শক্তি একটাই যা থেকে সকল কিছু আপাতশক্তিপ্রাপ্ত হয়। আর এই শক্তিই এক এবং অদ্বিতীয় পরমাত্মা।
দুইটা পয়েন্ট দেখে আলোচনা করব। একটা হল "কোটি" শব্দটির অর্থ নিয়ে। আরেকটা হল "দেবতা" শব্দটা নিয়ে। প্রথমেই কোটি শব্দটি নিয়ে বলি। কোটি অর্থ প্রচলিত বাংলায় Crore হলেও সংস্কৃত ভাষায় তার অর্থ "ধরণ" বা "প্রকার"।
আর বেদ এ দেবতা বলতে কোন শব্দ নেই। মূল সংস্কৃত শব্দটি হল দেব যার অর্থ শক্তি। অর্থাত্ ঈশ্বরের ৩৩ ধরণের শক্তি। এ বিষয়ে প্রথমেই যজুর্বেদ এর একটি মন্ত্র দেখে নেয়া যাক-
ত্রয়স্ত্রিং শতাস্তুবত ভুতান্য শাম্যন্ প্রজাপতিঃ।
পরমেষ্ঠ্যধিপতিরাসীত্।।
(যজুর্বেদ ১৪.৩১)
অর্থাত্ যাঁহার প্রভাবে গতিশীল প্রকৃতি নিয়ন্ত্রিত হয়, প্রজার পালক, সর্বব্যপক, অন্তরীক্ষে ব্যাপ্ত, তাঁহার মহাভূতের তেত্রিশ প্রকার গুণের স্তুতি কর।
এখন তেত্রিশ ধরণের শক্তির ব্যখ্যা দেখা যাক। শতপথ ব্রাহ্মন ১৪.৫ এ যাজ্ঞবল্ক্য ঋষি শাকল্যকে বলছেন - দেব ৩৩টি যা পরমেশ্বরের মহিমার প্রকাশক। ৮ বসু, ১১রুদ্র, ১২ আদিত্য, ইন্দ্র, প্রজাপতি।
শতপথ ব্রাহ্মন, মনুসংহিতা ও বৃহদারন্যক উপনিষদে এর বিস্তারিত বর্ণনা দেয়া আছে।
(বৃহদারন্যক উপনিষদ ৩.৯.২-১১)
"বিদগ্ধ শাকল্য যাজ্ঞবল্ক্যকে জিজ্ঞেস করলেন, হে যাজ্ঞবল্ক্য দেব (শক্তি) কয়টি? যাজ্ঞবল্ক্য বললেন ৩৩টি। তখন শাকল্য আবার বললেন, হে যাজ্ঞবল্ক্য দেব কয়টি? তখন তিনি আবার বললেন ৬টি। শাকল্য আবার বললেন, হে যাজ্ঞবল্ক্য দেব কয়টি? তখন যাজ্ঞবল্ক্য উত্তর দিলেন ৩টি। আবার শাকল্য জিজ্ঞেস করায় তিনি উত্তর দিলেন দুইটি। তখন শাকল্য আবার জিজ্ঞেস করলেন, হে যাজ্ঞবল্ক্য দেব কয়টি? তখন যাজ্ঞবল্ক্য বললেন দেড়টি। শাকল্য আবার জিজ্ঞেস করলেন, হে যাজ্ঞবল্ক্য দেব কয়টি? তখন তিনি বললেন একটি! তখন শাকল্য জিজ্ঞেস করলেন এই ৩৩টি দেব কি?"
যাজ্ঞবল্ক্য বললেন ৮ বসু যা হল অগ্নি, পৃথিবী, বায়ু, অন্তরীক্ষ, আদিত্য, দ্যৌ, চন্দ্র, নক্ষত্র, ১১ রুদ্র যা হল প্রাণ (নিঃশ্বাস), অপান(প্রশ্বাস), ব্যন, সমান, উদাম, নাগ, কুর্ম্ম, কৃকল, দেবদত্ত, ধনঞ্জয় এবং জীবাত্মা, ১২ আদিত্য হল ১২মাস, ইন্দ্র, প্রজাপতি অর্থাত্ মোট ৩৩টি। ইন্দ্র হল বিদ্যুত্ আর প্রজাপতি হল যজ্ঞ (যে কোনশুভ কর্ম)। ৬টা দেব কি কি?
তখন তিনি উত্তর দেন অগ্নি, পৃথিবী, বায়ু, অন্তরীক্ষ, আদিত্য, দ্যুঃ। তখন তিনি বললেন, তাহলে ৩টি দেব কি? তখন যাজ্ঞবল্ক্য বললেন, তিনলোক (ভ্যু, দ্যু, অন্তরীক্ষ)। তারপর শাকল্য আবার বললেন সেই দুইটি দেব কি কি? খাদ্য এবং প্রাণ - উত্তর দিলেন যাজ্ঞবল্ক্য। তখন আবার শাকল্য জিজ্ঞেস করলেন সেই দেড়টি কি? তখন যাজ্ঞবল্ক্য উত্তর দিলেন যিনি প্রবাহিত হন। তখন শাকল্য বললেন সেই এক এবং অদ্বিতীয় যিনি প্রবাহিত হন তাঁকে আপনি কিভাবে দেড় বললেন? তখন যাজ্ঞবল্ক্য বললেন যখন তা প্রবাহিত হয় তখনই সবকিছু উৎপন্ন হতে শুরু করে। তাহলে কে সেই এক?
প্রান! হ্যাঁ প্রাণ (পরমাত্মা) সেই এক এবং অদ্বিতীয় দেব যাকে সবাই তৎ বলে জানে।"
অসাধারন এই শৈল্পিক ও গভীর দার্শনিক কথোপকথন ব্যখ্যা করছে সেই এক এবং অদ্বিতীয় পরব্রহ্ম থেকে সবকিছু উৎপন্ন হতে শুরু করে।
একে একে অগ্নি, বায়ু, আদিত্য, ভু, দ্যু এবং অন্তরীক্ষলোক, বিদ্যুত্শক্তি সবকিছুই তার থেকে তৈরী হয় যাদেরকে ৩৩টি ভাগে ভাগ করা হয় এবং এদেরকে বলা হয় দেব অর্থাত্ শক্তি। আর দিন শেষে শক্তি একটাই যা থেকে সকল কিছু আপাতশক্তিপ্রাপ্ত হয়। আর এই শক্তিই এক এবং অদ্বিতীয় পরমাত্মা।
No comments:
Post a Comment