Friday, March 27, 2015

সৃষ্টিতত্ত্ব



বৈজ্ঞানিক এবং দার্শনিক মহলে অনেক রকমের সৃষ্টিতত্তের কথা শোনা যায়।চান্সেথিওরি, বিগবাং, ব্লাকহোল   , শুন্যবাদ (Voidism) ইত্যাদি ইত্যাদি। জগতে যত রকমের সৃষ্টি তত্বের সন্ধান পওয়া যায় , সে গুলিকে সর্ব মোট ২ ভাগে ভাগ করা যায়। এবং তা নিম্নরূপ:
1) Something out of something( কিছু থেকে কিছুর সৃস্টি)
2) Something out of nothing(শুন্য থেকে কিছুর সৃস্টি)
দ্বিতীয় তত্বটি অর্থাৎ শুন্য থেকে এই জগতের সৃষ্টি হল, এটি একটি যুক্তিহীন তত্ত্ব।কোন বৈজ্ঞানিক পরীক্ষাগারে যদি একটি শুন্য জার বসিয়ে রাখা হয়, তা থেকে কিছুর সৃষ্টি হবে না।পৃথিবীর সমগ্র ইতিহাসে শুরু থেকে আজ পর্যন্ত শুধু শুন্য থেকে কোনো কিছুর সৃষ্টি করা সম্ভব হয়নি।সুতরাং যারা বলে শুন্য থেকে জগতের সৃষ্টি হয়েছে, তারা শুধু বদ্ধ পাগল এবং বিনা প্রমানে, বিনা যুক্তিতে অন্ধ আবেগে ধাবিত হচ্ছে মাত্র।
এবার প্রথম তত্বটির বিচার করা যাক। কিছু থেকে কিছুর সৃষ্টি হলো। X থেকে Y সৃষ্টি হলো।সহজ বুদ্ধিতে এই তত্বটি যুক্তি গ্রাহ্য বলে মনে হয়। কারণ আমরা প্রায়ই শত সহস্র  X থেকে Y কে সৃষ্টি হতে দেখি।একটি মাত্র ছাপা খানা থেকে শত-সহস্র গ্রন্থ ছাপা হয়। একটি মাত্র রান্না ঘর থেকে কত রকমের সুস্বাদু খাবার তৈরী হচ্ছে। একটি মাত্র কাপড়ের কারখানা থেকে রং বেরং এর কাপড় বেরিয়ে আসছে। এইভাবে X থেকে Y , কিছু থেকে কিছুর সৃস্টি আমরা প্রায়ই দেখি। সুতরাং, Something out of সামথিং তত্বটি নিঃসন্দেহে যুক্তি গ্রাহ্য |তবে এখানেও একটি সুগভীর প্রশ্নআসে, X থেকে Y সৃষ্টিহল। তাহলে X থেকে Y সৃষ্টির উতস । এবারএই X টি কি রকম ? এই X টি কি কোন নির্বোধ জড় বস্তু নাকি সুচতুর সর্বজ্ঞ সর্বসক্তিমান ভগবান? একটি জটিল কম্পিউটার কখনো নির্বোধ জড় বস্তু থেকে সৃষ্টি হতে পারে না।একটি সুন্দর গ্রহ কখনো আবর্জনার স্তুপ থেকে সৃষ্টি হতে পারে না। মানুষের মস্তিস্ক হল এক অতি জটিল কম্পিউটার।এটা কখনো কোনো জড় নির্বোধ বস্তু থেকে সৃষ্টি হতে পারে না। রং-বেরং এর পাখি, বিচিত্র গন্ধ ময় ফুল, ফল, মশলা, জটিল শৃঙ্খলা বদ্ধ গ্রহ-নক্ষত্রের গতি বিধি, মহাজাগতিক ঋতু পরিবর্তন, সূর্য-চন্দ্রের অশেষ তেজ কোনো নির্বোধ জড় বস্তু থেকে আসতে পারে না। একটি সুন্দর ছবি যেমন এক খন্ড নির্বোধ জড় বস্তু থেকে আসতে পারে না, ঠিক তেমনি সুন্দর সুন্দর নর নারী, পশু-পাখি থেকে আমরা যে অপূর্ব শিল্প কলা দর্শন করি, তার উত্স কোন নির্বোধ কিসু হতে পারে না। "ডারউইনের" __ সিধান্ত অনুসারে আমরা ভগবানের বংশধর নই।আমরা বানরের বংশ ধর।তাই আমরা বানরের মতই নির্বোধ। কিন্তু যারা নির্বোধ নয়।তারা ঠিক বাসতে পারেন কিছুর থেকে কিছুর সৃষ্টিহয়েছে। -এবেপারে আমরা বিজ্ঞানীদের সাথে একশভাগ একমত। কিন্তু something কখনো নিরেট নির্বোধ নয়। সেই Something হলেন ষড় ঐসর্য পূর্ণ ভগবান শ্রীকৃষ্ণ।গীতা ভাগবত থেকে ইত্যাদি বৈদিক গ্রন্থথেকে আমরা সেই Something সম্পর্কে গভীর থেকে গভীরতর জ্ঞান লাভ করতে পারি।ভগবান যেহেতু নির্বোধ নন। তিনি আমাদের অসংখ শাস্ত্র দিয়েছেন যুগে যুগে দূত পাঠাচ্ছেন আবার নিজেও অবতীর্ণ হচ্ছেন। শ্রীমদভাগবত্গীতায় ভগবান শ্রীকৃষ্ণ যে, যখনযখন ধর্মের গ্লানি এবং অধর্মের অভুত্থান হয়, তখন তখন আমি সাধুদের সুরক্ষা এবং দুষ্টদের সংহার করার জন্য যুগে যুগে অবতীর্ণ হই।

No comments:

Post a Comment