Saturday, October 3, 2015

আপনি কি কখনো ভেবে দেখেছেন, মানুষ পশুদের চেয়ে কিসে উন্নত ?

চারটি কার্যকলাপ রয়েছে, যা মানুষ এবং পশু উভয়ের মধ্যেই বিদ্যমানঃ আহার, নিদ্রা, ভয় (আত্মরক্ষা) এবং মৈথুন (বংশবৃদ্ধি) .এই জগতে সকলেই এই চারটি কর্ম আরও ভালভাবে সম্পাদন করার জন্যা কঠোর পরিশ্রম করছে এবং এভাবে চেষ্টা করছে সুখী হবার.তাহলে একজন মানুষ এবং একটি পশুর মধ্যে পার্থক্য কি?

মহাভারতে বলা হয়েছে: - "আহার-নিদ্রা-ভয়- মৈথুনঞ্চ সামান্যমেতদ পশুভির্নরাণাম. ধর্মোঃ হি তেষামধিকো বিশেষো ধর্মেন ​​হীনা পশুভি-সমানা .. "- আহার, নিদ্রা, ভয় ও মৈথুন মানুষ ও পশুর সাধারণ বৈশিষ্ট্য.মানুষ যখন পরম তত্ত্ব সম্বন্ধে জানতে উদ্যোগী হয়, তখনই পশুদের সংগে তাদের পার্থক্য সূচিত হয়, অন্যথায় তারা পশুদেরই সমতুল্য.

ভগবদগীতায় বলা হয়েছে যে হাজার হাজার মানুষের মধ্যে কেবল কশ্চিৎ দু-একজন মানুষ এই প্রশ্ন করে, "কেন আমাকে এত দুঃখ-দুর্দশা ভোগ করতে হচ্ছে?" আমরা কেউই দুঃখক্লেশ ভোগ করতে চাই না, তবুও নানারকম দুঃখ-কষ্ট আমাদের উপর চাপিয়ে দেওয়া হয়.আমরা খুব বেশী শীত চাই না, তবুও আমাদের শীত সহ্য করতে হয়, আমরা অতিরিক্ত গরম চাই না, তবুও আমরা অসহনীয় গরম সহ্য করতে বাধ্য হই. ক্ষুধা, তৃষ্ণা, জরা, ব্যাধি, মৃত্যু - এগুলি আমরা কেউই চাই না. জীবনের প্রকৃত সমস্যা হচ্ছে জন্ম, মৃত্যু, জরা ও ব্যাধি.অথচ এইসব দুর্দশা ভোগ থেকে এ- জগতে কারোরই নিষ্কৃতি নেই.এই ভয়ংকর ও অনিবার্য দুঃখ-দুর্দশা পূর্ণ জড় অস্তিত্বে তাই প্রত্যেকেই উদ্বেগ-উৎকণ্ঠায় পুর্ণ.এইসব দুঃখ-দুর্দশার কারণ ও জীবনের প্রকৃত গন্তব্য স্থান হচ্ছে অনুসন্ধানের প্রকৃত বিষয়.ভগবান শ্রীকৃষ্ণ অর্জুনকে ভগবদগীতা উপদেশ দিয়েছিলেন এই প্রশ্নগুলির উত্তর দেওয়ার জন্য এবং অর্জুনকে তাঁর নিজের অবস্থা সম্বন্ধে অবগত করে তাঁকে সকল দুঃখ দুর্দশা থেকে মুক্ত করার জন্য. মানুষ হওয়ার কারণে কেবল আহার-নিদ্রা-ভয়- মৈথুনই আমাদের জীবনের উদ্দেশ্য নয়; মানব জীবনের উদ্দেশ্য কেবল দৈহিক কার্যকলাপ থেকে উচ্চতর, উন্নততর-তা হচ্ছে পরম সত্য- তত্ত্ব সম্বন্ধে জ্ঞান অর্জন করা.

No comments:

Post a Comment