Tuesday, December 24, 2013

"সোমরস"

সংস্কৃতে সোম মানে চাঁদ, গীতাতেও আছে- “পুষ্ণামী চৌষধীঃ সর্ব্বাঃ সোমো ভূত্ত্বা রসাত্মকঃ”।

অর্থ- রসাত্তক চন্দ্ররুপে ধান, যবাদি ঔষধী পুষ্টি করি।

আবার যোগীরা শরীরের পিনিয়াল গ্রন্থি নিঃসৃত হর্মোনকে সোমরস বা অমৃত বলে থাকেন। আধ্যাত্মিক সাধনায় যাঁহারা দেহচক্র সম্বন্ধে ধারণা রাখেন তাহারা এই সোমরস সম্বন্ধে বুঝিয়া থাকেন । এখন আপনিই বিচার করুণ রাতে চাঁদের উদিত হওয়া থেকে পৃথিবী কি পায় ?

ঋগ্বেদ ৮.৪৮.৩
অ অপামা সোমম অমৃত অভূমগ্নাম জ্যোতির অবিদাম দেবাম।
চ কি নুনম অস্মান কমবদ আরাতিহ কীম উ ধুরতির অমৃত মর্তস্য।।
এই মন্ত্রের মহর্ষি দয়ানন্দ এর ভাষ্যটি দেয়া হল-
সোম(ভাল ফল/খাদ্য কোনো মাদক পানীয় নয় ), অপামা (আমরা তোমাকে করি), অমৃত অভূম (তুমি জীবনীবর্ধক),
জ্যোতির অগ্ণম (শারীরিক শক্তি/ঈশ্বরের আলো দানকারী), অবিদাম দেবাম (ইন্দ্রিয়ের সংযমকারী),
কি নুনম অস্মান কমবদ আরাতিহ (এইপরিস্থিতিতে,আমা র অভ্যন্তরীণ শত্রু( ইন্দ্রিয়) আমার কী ই বা করতে পারে?)
কিম উ ধুরতির অমৃত মর্তস্য।। (হে ঈশ্বর, এমনকি হিংস্র মানুষ আমার কি করতে পারে?)
ঋগ্বেদ এর নবম মণ্ডল এর অপর নাম সোম পবমন মণ্ডল বা বিশুদ্ধ সোম মণ্ডল। এই মণ্ডল এ সোম এর বিভিন্ন অর্থ ও তার প্রয়োগ বর্ণনা দেয়া হয়েছে। একইভাব সামবেদ এর পূর্বারচীক এ ও পবমন পর্বে সোম
কে বর্ণনা করা হয়েছে
১) আধ্যাত্মিকতা বৃদ্ধি
২)অনুপ্রেরণাদায়ী
৩)বুদ্ধিবৃত্তি উন্নয়নকা
অথর্ববেদ ১৪.১.৩ এ বলা হয়েছে, “সাধারন ভাবে সোমকে তোমরা রস হিসেবে জান, কিন্তু প্রকৃত জ্ঞানী দ্বেষ নাশক অমৃতরুপ সোম এর সন্ধান করেন।“
এছাড়া আয়ুর্বেদ এ বিভিন্ন রোগনাশক ভেষজ ঔষধ কে সোম বলা হয়েছে।
বিজ্ঞানীরা এখনো সো এর গণ ও প্রজাতি জানার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন অর্থাৎ উপরোক্ত আলোচনা থেকে আমরা যে সোম শব্দটি একদিকে পরমা অন্যতম নাম হিসেবে ও অপর দিকে রোগ নিরাময়কারী ঔষধ হিসেবে ব্যবহ্রত হয়।

আমি বিভিন্ন গ্রন্থকারের টীকা থেকে যতটুকু জেনেছি তাহাই এখানে শেয়ার করিলাম । একটি কথা সকলের মনে রাখা চাই আমাদের সনাতন ধর্মগ্রন্থে নানা প্রসঙ্গ আছে যাহা দুস্কৃতিকারীরা তাঁদের মন মত ব্যাখ্যা করিয়া মানুষের মনে ভুল ধারণা জন্মাবার চেষ্টা শুধু আজ না সেই অতীত কাল থেকেই করে আসছে । তাই, বিরুপ মনোভাব নয় আসুন সকলেই তত্ত্বজ্ঞান লাভ করি । সত্যই সনাতন ।।

No comments:

Post a Comment